How to become an IAS officer in Bengali: Indian Administrative Service Officer বা আইএএস অফিসার (IAS Officer) অনেকের কাছেই যেনো স্বপ্নের মতো। সরকারী নীতি গঠন এবং কর্মসূচি বাস্তবায়নে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন IAS অফিসাররা। যদি এই মর্যাদাপূর্ণ কর্মজীবনে আপনিও প্রবেশ করতে চান তাহলে সেই যাত্রাপথ খুব একটা সহজ নয়। তাহলে কীভাবে একজন IAS অফিসার হবেন? আজকের প্রতিবেদনে ধাপে ধাপে প্রক্রিয়াগুলি বর্ণনা করা হলো।
How to become an IAS officer?
আপনি যদি উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর IAS Officer হবার স্বপ্ন দেখছেন, কিন্তূ জানেননা এর জন্য কি করতে হবে। তাহলে আজকের এই নিবন্ধ আপনার জন্য। নিচে IAS Officer সম্পূর্ন রোড ম্যাপ উল্লেখ রয়েছে। যা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন যে, কিভাবে IAS অফিসার হওয়া যায়।
প্রথম ধাপ:- শিক্ষাগত যোগ্যতা
IAS পরীক্ষার জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে অবশ্যই একটি স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করতে হবে। যদিও কোনো নির্দিষ্ট স্ট্রিমেই গ্রাজুয়েট হয়ে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বেশিরভাগ প্রার্থীরা রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, অর্থনীতি, জনপ্রশাসন বা আইনের মতো বিষয়গুলি বেছে নেন।
দ্বিতীয় ধাপ:- সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষা (CSE) ক্লিয়ার করুন
সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষা (CSE) হল একটি কঠিন এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা। এই পরীক্ষা পরিচালনা করে ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (UPSC)। এই পরীক্ষা আবার তিনটি স্তর নিয়ে গঠিত:
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: এটি আপনার সাধারণ জ্ঞান এবং যোগ্যতা পরীক্ষা করার একটি বস্তুনিষ্ঠ ধরনের পরীক্ষা। এটিতে দুটি পেপার রয়েছে: জেনারেল স্টাডিজ (GS) এবং সিভিল সার্ভিসেস অ্যাপটিটিউড টেস্ট (CSAT)।
- Mains পরীক্ষা: আপনি যদি প্রিলিমের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন, তাহলে মেইনস পরীক্ষার দিতে পারবেন। এর মধ্যে প্রবন্ধ লেখা, ভাষা বোঝা এবং ঐচ্ছিক বিষয় সহ বিস্তৃত বিষয়ের নয়টি পেপার থাকে।
- ইন্টারভিউ (পার্সোনালিটি টেস্ট): যে প্রার্থীরা মূল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তাদের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য, যোগাযোগের দক্ষতা এবং আইএএস অফিসারের ভূমিকার জন্য সামগ্রিক ভাবে উপযুক্ত কিনা মূল্যায়ন করার জন্য একটি ইন্টারভিউ নেওয়া হয়।
তৃতীয় ধাপ:- একটি ঐচ্ছিক বিষয় নির্বাচন করুন
মূল পরীক্ষায় একটি ঐচ্ছিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে। এমন একটি বিষয় বেছে নিন যার সাথে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং বিষয়টি সঞ্জ ভালোভাবে বুঝতে পারেন। এই পেপারে আপনার কর্মক্ষমতা আপনার সামগ্রিক স্কোরকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে থাকে।
চতুর্থ ধাপ: পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি
CSE-এর জন্য প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা, এবং একটি সুগঠিত অধ্যয়ন পরিকল্পনা। একটি ভালো মানের কোচিং ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন এবং তার পাশাপাশি একটি পড়াশোনার নির্দিষ্ট সময়সূচী তৈরি করুন। এমন ভাবে পড়াশোনার সময়সূচি তৈরি করবেন যাতে প্রত্যেকটি বিষয়কে ভালোভাবে কভার করা যায়। পরীক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলি সম্পর্কে সবসময় আপডেট থাকুন। সংবাদপত্র পড়ুন এবং মক টেস্ট অনুশীলন করুন।
পঞ্চম ধাপ:- নিজের দক্ষতা বিকাশ করুন
আইএএস অফিসারদের শুধু একাডেমিক জ্ঞানের চেয়ে বেশি প্রয়োজন; তাদের কার্যকর যোগাযোগ, নেতৃত্ব প্রদান করার এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা। আপনার যোগাযোগের ক্ষমতা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং নিজস্ব দক্ষতা বৃদ্ধি করে এমন ক্রিয়াকলাপগুলিতে নিজেকে নিযুক্ত করুন।
ষষ্ঠ ধাপ:- সরকারি নীতি সম্পর্কে অবগত থাকুন
সরকারী নীতি, আর্থ-সামাজিক সমস্যা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের সম্মুখীন হওয়া চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে সচেতন হওয়া একজন আইএএস অফিসারের জন্য অপরিহার্য বিষয়। বর্তমান ঘটনা, নীতি পরিবর্তন এবং উন্নয়নমূলক উদ্যোগ বিয়ে সব সময় নিজেকে আপডেট রাখুন।
সপ্তম ধাপ:- শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা বজায় রাখুন
একজন আইএএস অফিসারের তাঁর নিজস্ব ভূমিকার পালনের জন্য শারীরিক এবং মানসিক দৃঢ়তা প্রয়োজন। সুস্থ ও মনোযোগী থাকার জন্য নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, ধ্যান এবং স্ট্রেস-মুক্তির কৌশলগুলি রপ্ত করুন।
অষ্টম ধাপ:- UPSC পরীক্ষার জন্য আবেদন করুন
নিজেকে প্রস্তুত বলে মনে হলে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে UPSC CSE-এর জন্য আবেদন করুন। আবেদনের সময়সীমার দিকে খেয়াল রাখুন। আপনি সমস্ত যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণ করে থাকলে আবেদন করুন।
নবম ধাপ: ইন্টারভিউ রাউন্ড ক্লিয়ার করুন
আপনি যদি ইন্টারভিউ রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হন তাহলে আত্মবিশ্বাসের সাথে যাঁরা ইন্টারভিউ নেবেন তাঁদের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করুন। আপনার চিন্তাভাবনাগুলি স্পষ্টভাবে প্রকাশ করুন। এই পর্যায়ে আপনার ধারণা এবং মতামত প্রকাশ করার ওপর ভিত্তি করে আপনার ক্ষমতা মূল্যায়ন করা হবে।
দশম ধাপ:- অধ্যবসায় করুন এবং সংকল্পবদ্ধ থাকুন
একজন আইএএস অফিসার হওয়ার জন্য প্রয়োজন নিষ্ঠা, কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়। আপনার লক্ষ্যে সব সময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকুন। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষালাভ করুন এবং নিজেকে আরও উন্নত করার জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করুন।
একজন আইএএস অফিসার হওয়া খুবই চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তবে একবার সফল হলে জাতির উন্নয়নে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখার সুযোগ দেয়। সঠিক প্রস্তুতি, দৃঢ় সংকল্প এবং জনসেবার প্রতি আবেগের নিয়ে একজন IAS অফিসার হওয়ার স্বপ্নকে উপলব্ধি করুন।
ভারতে কিভাবে একজন IAS অফিসার হওয়া যায়
ইউপিএসসি দ্বারা প্রতি বছর পরিচালিত সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা সফলভাবে পাস করলেই আইএএস অফিসার হওয়া যায়। এই পরীক্ষাটি IAS, IPS, IFS, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন পরিষেবা এবং সংশ্লিষ্ট ভূমিকা সহ প্রায় ২৫টি স্বতন্ত্র পরিষেবার জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নির্বাচন করে। সাধারণত, প্রতি বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে UPSC আবেদনের আমন্ত্রণ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। প্রাথমিক পর্যায়ের পরীক্ষা মে মাসের শেষের দিকে বা জুনের শুরুতে নেওয়া হয়।
UPSC দ্বারা সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা একটি তিন স্তর রয়েছে:
- প্রিলিমিনারি পরীক্ষা
- সিভিল সার্ভিস (Mains) পরীক্ষা
- ব্যক্তিত্ব পরীক্ষা বা ইন্টারভিউ আইএএস অফিসার এবং তাঁদের দায়িত্ব
ভারতের সিভিল সার্ভিসের মধ্যে একটি মর্যাদাপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হন একজন আইএএস অফিসার। এই অফিসারদের ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা UPSC আয়োজিত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিযুক্ত হন আইএএস অফিসাররা। দক্ষ শাসন পরিকাঠামো গড়ে তোলা এবং জনসেবা প্রদান করার জন্য আইএএস অফিসারদের সরকারী নীতি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁরা রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় উভয় পর্যায়ে সরকারের বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে ভূমিকা পালন করেন। অর্থ, আইন প্রয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং অবকাঠামোর মতো প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতির অগ্রগতি এবং কল্যাণে আইএএস অফিসারদের অবদান রয়েছে। তাঁদের দক্ষতা এবং নেতৃত্বের মাধ্যমে, আইএএস অফিসাররা দেশের গঠন এবং প্রগতিশীল রূপান্তরে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখেন। একজন আইএএস অফিসার সরকারকে নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নে সহায়তা করেন।
আইএস অফিসারদের দায়িত্ব
আইএএস অফিসারদের দায়িত্ব তাঁদের ভূমিকার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয়। তাঁদের কাজকে তিন ধরনের অ্যাসাইনমেন্টে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে:
- কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট অ্যাসাইনমেন্ট:- কেন্দ্রীয় স্তরের কর্মকর্তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নীতি পর্যালোচনা, প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত সচিবালয় পদগুলি পরিচালনা করেন।
- ফিল্ড অ্যাসাইনমেন্ট:- ফিল্ড অ্যাসাইনমেন্টে, অফিসাররা সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) হিসাবে উপ-বিভাগীয় কাজগুলি সম্পাদন করেন, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখেন, উন্নয়নমূলক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। জেলা পর্যায়ে, তাঁরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, কালেক্টর বা ডেপুটি কমিশনারের মতো ভূমিকা গ্রহণ করেন, অনুরূপ কার্য সম্পাদন করে এবং এসডিএম পরিচালনা করে।
- রাজ্য সচিবালয় অ্যাসাইনমেন্ট:- রাজ্য সচিবালয়ের ভূমিকায় আইএএস অফিসাররা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরামর্শ প্রদান করেন। সরকারী প্রক্রিয়াগুলির জন্য নীতি প্রণয়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অবদান রাখেন আইএএস অফিসাররা।
একজন আইএএস অফিসারের অন্যান্য দায়িত্ব:-
- সরকারি কাজকর্ম পরিচালনা করা।
- নীতি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং পর্যালোচনা।
- বিভিন্ন বিভাগ এবং নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সাথে পরামর্শ করা
- বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল পরিচালনা এবং বিতরণ করা।
- সরকারি স্কিম ও উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়নের তদারকি করা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বড় দুর্ঘটনা, এবং মধ্যে দাঙ্গার মতো জরুরী পরিস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করা এবং ত্রাণ বিতরণে সাহায্য করা।
আইএএস অফিসারের কর্মজীবনের পদোন্নতি
বেশিরভাগ আইএএস অফিসারদের জন্য সাধারণ কর্মজীবনের পদোন্নতি নিয়োগকৃত ক্যাডারের উপর ভিত্তি করে পদের ক্রম পরিবর্তিত হয়।
- জেলা পর্যায়ে নির্ধারিত ক্যাডারে প্রশিক্ষণ।
- LBSNAA-তে প্রথম ধাপের প্রশিক্ষণ, বিদেশে ভারতের একটি কূটনৈতিক মিশনের সাথে এক সপ্তাহব্যাপী বিদেশী সংযুক্তি সহ তিন মাসের জন্য অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকারের সংযুক্তি।
- এসডিএম/জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট/সাব কালেক্টর হিসেবে পোস্টিং।
- মিউনিসিপাল কমিশনার, ডিডিও/সিডিও হিসেবে পোস্টিং।
- ডিএম/কালেক্টর হিসেবে পোস্টিং।
- ডাইরেক্টর/জয়েন্ট সেক্রেটারি পর্যায়ে রাজ্য সচিবালয়ে পোস্টিং।
- কেন্দ্রীয় সরকারে ডেপুটেশন, কয়েক বছর চাকরি করার পরে উপলব্ধ একটি বিকল্প।
- রাজ্য সচিবালয়/কেন্দ্রীয় সচিবালয়ে প্রধান/অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি।
- রাজ্যের চিফ সেক্রেটারি।
- ক্যাবিনেট সেক্রেটারি
- ভারতের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি হল IAS অফিসারদের দ্বারা অর্জনযোগ্য সর্বোচ্চ পদ।
ভারতে IAS অফিসারের বেতন (সপ্তম কেন্দ্রীয় বেতন কমিশন অনুযায়ী):
বর্তমানে সপ্তম পে কমিশন অনুসারে IAS অফিসারদের বেতন দেয় সরকার। একজন আধিকারিক প্রতি মাসে বেসিক পে হিসেবে পান ৫৬,১০০টাকা। এছাড়াও রয়েছে মহার্ঘ্য ভাতা বা DA, ট্যুর অ্যালাউনস বা TA ও বাড়ি ভাড়ার ভাতা বা HRA। সব মিলিয়ে একজন IAS অফিসার প্রতি মাসে প্রায় লাখ টাকা বেতন পান। পদোন্নতি ও পদমর্যাদা বাড়লে, একই ভাবে বেতনও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। কোনও মন্ত্রীর সচিবের পদের আধিকারিকের বেসিক পে প্রায় ২,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে৷
আরও পড়ুন: মাসে ২৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকা বেতনে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে কর্মী নিয়োগ! শীঘ্রই আবেদন করুন।
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ | Join Group |
আমাদের টেলিগ্রাম | Join Here |
অন্যান্য চাকরির আপডেট | View More |